আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের স্বল্প সময়ের মধ্যেই দেশের আইনগত সহায়তা ব্যবস্থায় এমন সব পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫: মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান’ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আগে লিগ্যাল এইডে যেতে হবে। যদি সেখানেই সমাধান না হয়, তবে বিচারিক আদালতে যাওয়া যাবে। এটি লিগ্যাল এইডের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে ১১ ধরনের মামলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে চেক প্রতারণাও রয়েছে। আগে একজন সিনিয়র সহকারী জজ দায়িত্বে থাকলেও এখন তার সঙ্গে থাকবেন একজন সিনিয়র জজ ও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা সিভিল ও ক্রিমিনাল আদালত পৃথক করেছি, যাতে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। বিচারিক পদ সৃষ্টির ক্ষমতা রাজনৈতিকদের হাতে ছিল, এখন সেটা প্রধান বিচারপতির আওতায় এনেছি। আমি নিজে ফাইল হাতে নিয়ে অনুমোদন করিয়েছি—এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনও হয়নি।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “আমি কোনো ফুটবল খেলোয়াড় নই যে সঙ্গে সঙ্গে ফল দেখা যাবে। আমাদের কাজের ফল দীর্ঘমেয়াদে বোঝা যাবে। ইতোমধ্যেই হাজার হাজার মানুষ কম খরচে, কম সময়ে এবং ভোগান্তি ছাড়াই ন্যায়বিচার পাচ্ছেন।”
তিনি জানান, মামলার আগেই লিগ্যাল এইডে মধ্যস্থতা হলে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ আর আদালতে যান না, ফলে উচ্চ আদালতের চাপ কমছে। এতে বিচারপ্রক্রিয়া আরও সহজ ও দ্রুত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই জারি করা ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর আওতায় প্রথম ধাপে ১২টি জেলায় বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা চালু হয়েছে। জেলাগুলো হলো: সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও রাঙামাটি।
অনুষ্ঠানের আগে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সিলেটের রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট ঘুরে দেখেন।