ভারতের কেরালার কোচিতে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি পালন করেছেন একদল ব্যাংক কর্মী। সম্প্রতি কানারা ব্যাংকের ক্যান্টিনে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করেন নতুন যোগদানকারী উপ-আঞ্চলিক পরিচালক আশ্বিনী কুমার। এর প্রতিক্রিয়ায় ব্যাংকের সামনে প্রকাশ্যে গরুর মাংস রান্না ও ভোজের আয়োজন করেন কর্মীরা।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার ব্যাংক কর্মীরা ঐতিহ্যবাহী কেরালার খাবার পরোটা ও গরুর মাংস রান্না করে সবাই মিলে খেয়ে প্রতিবাদ জানান।
জানা গেছে, আশ্বিনী কুমার বিহার থেকে আসার পর কেরালার এই শাখায় দায়িত্ব নেন এবং যোগদানের পরপরই ক্যান্টিনে গরুর মাংসে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। শুধু তাই নয়, কর্মীদের নানা বিষয়ে হেনস্তা করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এক কর্মী এনডিটিভিকে জানান, প্রথমে তারা তার হেনস্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন। পরে ক্যান্টিনে গরুর মাংস নিষিদ্ধের বিষয়টি জানার পর তারা প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ‘বিফ পার্টি’র সিদ্ধান্ত নেন।
ভারতীয় ব্যাংক কর্মী ফেডারেশনের এক নেতা বলেন, খাবারের পছন্দ ব্যক্তিগত অধিকার, যা ভারতীয় সংবিধানে সুরক্ষিত। কোনো কর্মকর্তা তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ কর্মীদের অধিকার কেড়ে নিতে পারেন না।
এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
কেরালার রাজনীতিবিদরা ব্যাংক কর্মীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। রাজ্যের স্বতন্ত্র এমপি কে টি জলিল এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “কেরালায় কেউ ঠিক করবে না কে কী খাবে বা পড়বে। বিজেপি-আরএসএসের মতাদর্শ এখানে চলবে না।”
তিনি আরও বলেন, “কেরালা লালের মাটি। এখানে জাফরান পতাকার জায়গা নেই। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা একসাথে প্রতিরোধ করব।”
উল্লেখ্য, কেরালার সংস্কৃতিতে গরুর মাংস বহুদিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। ২০১৭ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গরু কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা জারি করলে কেরালা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে এবং তা নিয়ে রাজনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।